ঢাকা ০১:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে আনছেন ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীন। শাহজাহানপুরের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কাজল আটক খোকসা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ড এলাকা উপজেলা পেছনে দীর্ঘ বছর ধরে অবহেলিত অবস্থায়। সহকারী শিক্ষক দ্বারা নারী প্রধান শিক্ষক লাঞ্চিত হাসপাতাল নির্মাণের জন্য তিস্তা প্রকল্প সংলগ্ন অঞ্চলে কমপক্ষে ১২ একর জায়গা খোঁজা হচ্ছে: তিস্তাপাড়ে চীনের হাসপাতাল স্থাপনের দাবি নদীভাঙনকবলিত মানুষের চট্টগ্রামে চলন্ত বাসে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে ধ*র্ষণের অভিযোগে বাসের চালক ও হেলপারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কুড়িগ্রামে ৪৭ কেজিসহ দুইজন আটক ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে রংপুরে আধাবেলা ধর্মঘট পালিত : ফিলিস্তিনে শহীদদের জন্য দোয়াসহ ইসরাইলি সব পণ্য বয়কটের ডাক টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের পাশে পরিত্যক্ত হাতবোমা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ২৫ জন আহত শিক্ষার্থীদের মাঝে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সম্মাননা সনদ ও চেক হস্তান্তর

ঘোড়াঘাটে কৃষকের গলার কাঁটা আলু

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:১৬:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ২৮ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক যখন সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ফাহিম হোসেন রিজু ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে কৃষকের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে তাদের উৎপাদিত আলু। এক কেজি আলুর উৎপাদন খরচ ১৪ থেকে ১৬ টাকা হলেও জমি থেকে তা ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষকরা সাধারণত লোকসান থেকে বাঁচতে উৎপাদন মৌসুমে আলু না বেচে হিমাগারে রাখে। কিন্তু এবার সেখানেও বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার কেজিতে ১ টাকা বাড়িয়ে হিমাগার ভাড়া ৮ টাকা করা হয়েছে। তাতে কৃষককে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বাড়তি গুনতে হবে। হিমাগার, কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, হিমাগার মালিকরা জোটবদ্ধ হয়ে প্রতি বছর ভাড়া বাড়াচ্ছে। এবারও বাড়িয়েছে। কৃষকরা যখন আলু বিক্রি করে তখন দাম থাকে না। কিন্তু যখন দাম বাড়ে, তখন মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করে। হিমাগারের এমন ভাড়া বৃদ্ধি কৃষকের পক্ষে আলু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। অথচ সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে আলু কিনে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারে। তাতে একদিকে যেমন মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে, অন্যদিকে সংকটও কমে আসবে। সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে চালু রয়েছে ৩৫০টি হিমাগার। ওসব হিমাগারে ৩০ লাখ টন (৩০০ কোটি কেজি) আলুর ধারণক্ষমতা রয়েছে। তাতে ৮ টাকা কেজি ভাড়া হলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মোট ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা দিতে হবে এমন পরিস্থিতিতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারে আলু রাখতে অনীহা প্রকাশ করছে। তাছাড়া হিমাগার মালিকরা একতরফা ভাড়া বাড়ানো নিয়েও তাদের আপত্তি রয়েছে। দেশে বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায় ৫৫টি হিমাগার রয়েছে। সেগুলোর সম্মিলিত ধারণক্ষমতা প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার টন। ২০ ফেব্রুয়ারীর পর থেকে আলু সংরক্ষণ শুরু হবে। মৌসুমে ১০-১২ দিনেই আলুতে ভরে যায় একটি হিমাগার। এতো অল্প সময়ে ২ লাখ টন আলু মাপা সম্ভব নয়। কিন্তু আস্তে আস্তে বের করা হয়। কোনো কোনো হিমাগার থেকে আলু বের হতে সময় লেগে যায় ছয় থেকে আট মাস। সেজন্য এবার হিমাগারের ভাড়া আলু বের করার সময় নেয়া হবে। অথচ গত বছরও আলু রাখার সময় ভাড়া নেয়া হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, হিমাগারে আলু রাখার ভাড়া বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন নির্ধারণ করে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে শ্রমিক খরচ ও বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাওয়ায় ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। আর সংরক্ষণ ভাড়া বাড়ার চাপ ভোক্তা পর্যায়েও পড়বে। সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দেবে আলুর দাম। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দিয়ে জেলায় জেলায় চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, হিমাগারের বিপরীতে নেয়া ঋণের সুদ, বিদ্যুৎ খরচ, লোডিং- আনলোডিং ও পাল্টানোর খরচ, কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, বীমা খরচ, গ্যাস বিল, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বিশ্লেষণ করে প্রতি কেজি আলুর সংরক্ষণ ব্যয় দাঁড়ায় ৯ টাকা ৬২ পয়সা। তারপরও ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে কেজি প্রতি ৮ টাকা। গত বছর ব্যাংক সুদের হার ছিল ৯- ১০ শতাংশ। এ বছর তা বেড়ে ১৬-১৭ শতাংশ হয়েছে। তবে বিদ্যুতের বিল অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে কৃষকদের দাবি, আগে কেজি হিসেবে নয়, বস্তা হিসেবে হিমাগারে আলু রাখা হতো। এবার বস্তা হিসেবে রাখতে দেয়া হচ্ছে না। আগে প্রতি বস্তার ভাড়া ছিল ৩২০-৩৫০ টাকা। আর এক বস্তায় ৭০ থেকে ৮০ কেজি পর্যন্ত আলু রাখা যেতো। এবার প্রতি বস্তায় ৫০ কেজির বেশি রাখা যাবে না। আর ভাড়া পড়বে ৮ টাকা হিসেবে ৪০০ টাকা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ঘোড়াঘাটে কৃষকের গলার কাঁটা আলু

আপডেট সময় : ১১:১৬:৪২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ফাহিম হোসেন রিজু ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে কৃষকের গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে তাদের উৎপাদিত আলু। এক কেজি আলুর উৎপাদন খরচ ১৪ থেকে ১৬ টাকা হলেও জমি থেকে তা ১০ থেকে ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কৃষকরা সাধারণত লোকসান থেকে বাঁচতে উৎপাদন মৌসুমে আলু না বেচে হিমাগারে রাখে। কিন্তু এবার সেখানেও বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবার কেজিতে ১ টাকা বাড়িয়ে হিমাগার ভাড়া ৮ টাকা করা হয়েছে। তাতে কৃষককে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা বাড়তি গুনতে হবে। হিমাগার, কৃষক ও আলু ব্যবসায়ীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, হিমাগার মালিকরা জোটবদ্ধ হয়ে প্রতি বছর ভাড়া বাড়াচ্ছে। এবারও বাড়িয়েছে। কৃষকরা যখন আলু বিক্রি করে তখন দাম থাকে না। কিন্তু যখন দাম বাড়ে, তখন মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করে। হিমাগারের এমন ভাড়া বৃদ্ধি কৃষকের পক্ষে আলু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। অথচ সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে আলু কিনে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে পারে। তাতে একদিকে যেমন মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে, অন্যদিকে সংকটও কমে আসবে। সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে চালু রয়েছে ৩৫০টি হিমাগার। ওসব হিমাগারে ৩০ লাখ টন (৩০০ কোটি কেজি) আলুর ধারণক্ষমতা রয়েছে। তাতে ৮ টাকা কেজি ভাড়া হলে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের মোট ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা দিতে হবে এমন পরিস্থিতিতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগারে আলু রাখতে অনীহা প্রকাশ করছে। তাছাড়া হিমাগার মালিকরা একতরফা ভাড়া বাড়ানো নিয়েও তাদের আপত্তি রয়েছে। দেশে বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায় ৫৫টি হিমাগার রয়েছে। সেগুলোর সম্মিলিত ধারণক্ষমতা প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার টন। ২০ ফেব্রুয়ারীর পর থেকে আলু সংরক্ষণ শুরু হবে। মৌসুমে ১০-১২ দিনেই আলুতে ভরে যায় একটি হিমাগার। এতো অল্প সময়ে ২ লাখ টন আলু মাপা সম্ভব নয়। কিন্তু আস্তে আস্তে বের করা হয়। কোনো কোনো হিমাগার থেকে আলু বের হতে সময় লেগে যায় ছয় থেকে আট মাস। সেজন্য এবার হিমাগারের ভাড়া আলু বের করার সময় নেয়া হবে। অথচ গত বছরও আলু রাখার সময় ভাড়া নেয়া হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, হিমাগারে আলু রাখার ভাড়া বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন নির্ধারণ করে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে শ্রমিক খরচ ও বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যাওয়ায় ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। আর সংরক্ষণ ভাড়া বাড়ার চাপ ভোক্তা পর্যায়েও পড়বে। সুযোগ বুঝে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়ে দেবে আলুর দাম। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ কোল্ডস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দিয়ে জেলায় জেলায় চিঠি পাঠিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, হিমাগারের বিপরীতে নেয়া ঋণের সুদ, বিদ্যুৎ খরচ, লোডিং- আনলোডিং ও পাল্টানোর খরচ, কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, বীমা খরচ, গ্যাস বিল, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বিশ্লেষণ করে প্রতি কেজি আলুর সংরক্ষণ ব্যয় দাঁড়ায় ৯ টাকা ৬২ পয়সা। তারপরও ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে কেজি প্রতি ৮ টাকা। গত বছর ব্যাংক সুদের হার ছিল ৯- ১০ শতাংশ। এ বছর তা বেড়ে ১৬-১৭ শতাংশ হয়েছে। তবে বিদ্যুতের বিল অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিকে কৃষকদের দাবি, আগে কেজি হিসেবে নয়, বস্তা হিসেবে হিমাগারে আলু রাখা হতো। এবার বস্তা হিসেবে রাখতে দেয়া হচ্ছে না। আগে প্রতি বস্তার ভাড়া ছিল ৩২০-৩৫০ টাকা। আর এক বস্তায় ৭০ থেকে ৮০ কেজি পর্যন্ত আলু রাখা যেতো। এবার প্রতি বস্তায় ৫০ কেজির বেশি রাখা যাবে না। আর ভাড়া পড়বে ৮ টাকা হিসেবে ৪০০ টাকা।