ঢাকা ০৭:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
চন্দ্রগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের আত্মপ্রকাশ আগের বিদ্যুৎ বিল চেয়ে বর্তমান বিদ্যুত বিল তুলনা মূলকভাবে বেশী নিচ্ছেন অনেক গ্রহকের অভিযোগ জাতীয় নির্বাচনে পুলিশকে ‘ব্যবহার’ করার সুযোগ দেওয়া যাবে না: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস রাজস্ব নীতিতে অভিজ্ঞতার অবমূল্যায়নের অভিযোগ: কাস্টমস ও ভ্যাট অ্যাসোসিয়েশনের বেগমগঞ্জের ০৫ নং ছয়ানীতে ছাত্রদল কর্মীদের হাতে খুন হলো যুবদল কর্মী, আটক ৩ রাজধানী ঢাকা যাএাবাড়ী-মাতুয়াইলে ঢাকা-চট্রগ্রামে মহাসড়কের বাসের ধাক্কায় বাইক চালক আহত মনোহরদীতে দুর্বিত্তদের হামলায় বাড়ী-ঘর ও দোকান ভাংচুর এবং নগদ অর্থ লুটের অভিযোগ ফেনী ছাগলনাইয়ায় মাদক কারবারিদের হামলায় ৫ ডিবি পুলিশ আহত, আটক ৩ নীলফামারীতে স্বামীর নির্যাতনের স্বীকার গৃহবধূ চট্টগ্রাম পাহাড়তলীতে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী গ্রেফতার

বোরো ধানের খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় জলঢাকার কৃষকেরা

হাসানুজ্জামান সিদ্দিকী হাসান, বিভগীয় প্রধান রংপুর বুরো
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৯:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫ ৫৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক যখন সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

হাসানুজ্জামান সিদ্দিকী হাসান, বিভগীয় প্রধান রংপুর বুরো

মাঘ মাসের শেষের দিকে হটাৎ করে কুয়াশার চাদরে ঢাকা উত্তরের জেলা নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা। এ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে বোরোধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। এতে অতিরিক্ত খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেছেন তারা। বর্তমানে বিদ্যুৎ, সার,ডিজেল, শ্রমিক সহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার বোরো ধান চাষে অতিরিক্ত খরচের দুশ্চিন্তা তাদের কপালে। মাঘের হিমেল কনকনে ঠান্ডা বাতাস,আর ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে জমি তৈরী ও বোরো ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। বোরো ধানের চারা রোপনে পুরুষদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরাও। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেলে অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে দিতে পারবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৭ শত ২৫ হেক্টর জমি।
অন্যদিকে কৃষকদের সরকারী প্রণোদনা সহ কৃষি সংক্রান্ত সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করছে কৃষি অফিস।
বুধবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা ও জানাযায়, জমি তৈরী সহ বোরো ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এতে প্রতি বিঘা জমিতে ডেপ ১০ -১৫ কেজি, পটাস ১০, টিএসপি ১০,
জিপসাম ৫ ও ৫-৭ কেজি ইউরিয়া সার মিশিয়ে ৩-৪ চাষের মাধ্যমে জমি তৈরী করে ধানের চারা রোপন করছেন কৃষকেরা। ইতিমধ্যে এ উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপন শেষ হয়েছে জানায উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল দোলাপাড়া এলাকার গভীর নল কুপের মালিক আমিনুর রহমান জানান, প্রতিবছর আমার এই গভীর নলকুপ দিয়ে এই সময়ে প্রায় ২ শত থেকে ২৫০ বিঘা জমিতে পানি সেচ দিয়ে থাকি। এখন পর্যন্ত এই গভীর নলকুপের আওতায় প্রায় ৬০-৭০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করেছে কৃষকেরা। প্রতি এক একর জমির জন্য নেওয়া হচ্ছে ৪ হাজার ২ শত টাকা। গত বছর নেওয়া হয়েছিল ৩৬০০-৩৮০০ টাকা।বিদ্যুৎ খরচ বেশী তাই। উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল হাজীপাড়া গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান জানান আমি ৮ থেকে ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন শেষ হবে। তবে গতবছরের তুলনায় এবার খরচের হিসাব আমি বেশি গুনতে হবে। পানি সেচের খরচ, জমি চাষ করা সার কীটনাশক ও শ্রমিক সহ সবকিছুর দাম বেশি। তার দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রনোধনা হিসাবে হাইব্রিড জাতের ধানে বীজ ও সার পেয়ে খুব উপকার হয়েছে। এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে গতবারের মতো এবারও বোরো ধানের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি।গত বছর ধানের ভালো দাম পেয়েছি। আশা করছি এবারও ভালো দাম পেলে খরচ পুষিয়ে নিতে পারবো বলে আশা করছি। উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল হাজীপাড়া এলাকার বর্গা চাষী গোপাল চন্দ্র রায় বলরন, হামরা ( আমরা) গরীব মানুষ নিজের কোন জমি নাই। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করি। বর্তমানে বাজারে আগের চাইতে সার সহ কৃষির সকল পনের দাম বেশী। তবে আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে এবং ধানের দাম বেশি পেলে খরচ পুষিয়ে নিতে পারবো। বালাগ্রাম এলাকার বোরো ধানের চারা রোপন কাজের শ্রমিক আব্দুল আজিজ বলেন আমরা কয়েকজন মিলে একটা দল তৈরী করেছি। দীর্ঘদিন থেকে আমরা সকল ধানের চারা রোপন করে থাকি। এবার প্রতি বিঘা (৩৩শতক)
বোরো ধানের চারা রোপন করার জন্য ১৩০০ টাকা করে নিচ্ছি। প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করছি। শৌলমারী ইউনিয়নের এক নারী শ্রমিক জানান আমরা প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা হাজিরা হিসাবে বোর ধানের চারা রোপন করছি। উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন আহমেদ জানান চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষেের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি। ইতি মধ্যে চারা রোপনের কাজ শেষ পর্যায়ে। আর কয়েকদিনের মধ্যে শেষ হবে।তিনি আরও বলেন সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলার প্রায় ১০০০ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বোরো হাইব্রীড ধানের বীজ বিতরন করা হয়েছে। আর উফসি জাতের প্রণোদনা হিসাবে ২০০০ জনের মাঝে সার বিতরণ করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বোরো ধানের খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় জলঢাকার কৃষকেরা

আপডেট সময় : ০৯:৫৯:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ মার্চ ২০২৫

হাসানুজ্জামান সিদ্দিকী হাসান, বিভগীয় প্রধান রংপুর বুরো

মাঘ মাসের শেষের দিকে হটাৎ করে কুয়াশার চাদরে ঢাকা উত্তরের জেলা নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা। এ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে বোরোধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। এতে অতিরিক্ত খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেছেন তারা। বর্তমানে বিদ্যুৎ, সার,ডিজেল, শ্রমিক সহ সব কিছুর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার বোরো ধান চাষে অতিরিক্ত খরচের দুশ্চিন্তা তাদের কপালে। মাঘের হিমেল কনকনে ঠান্ডা বাতাস,আর ঘন কুয়াশাকে উপেক্ষা করে জমি তৈরী ও বোরো ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। বোরো ধানের চারা রোপনে পুরুষদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরাও। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেলে অতিরিক্ত খরচ পুষিয়ে দিতে পারবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৭ শত ২৫ হেক্টর জমি।
অন্যদিকে কৃষকদের সরকারী প্রণোদনা সহ কৃষি সংক্রান্ত সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করছে কৃষি অফিস।
বুধবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা ও জানাযায়, জমি তৈরী সহ বোরো ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এতে প্রতি বিঘা জমিতে ডেপ ১০ -১৫ কেজি, পটাস ১০, টিএসপি ১০,
জিপসাম ৫ ও ৫-৭ কেজি ইউরিয়া সার মিশিয়ে ৩-৪ চাষের মাধ্যমে জমি তৈরী করে ধানের চারা রোপন করছেন কৃষকেরা। ইতিমধ্যে এ উপজেলায় ২৫ হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপন শেষ হয়েছে জানায উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল দোলাপাড়া এলাকার গভীর নল কুপের মালিক আমিনুর রহমান জানান, প্রতিবছর আমার এই গভীর নলকুপ দিয়ে এই সময়ে প্রায় ২ শত থেকে ২৫০ বিঘা জমিতে পানি সেচ দিয়ে থাকি। এখন পর্যন্ত এই গভীর নলকুপের আওতায় প্রায় ৬০-৭০ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করেছে কৃষকেরা। প্রতি এক একর জমির জন্য নেওয়া হচ্ছে ৪ হাজার ২ শত টাকা। গত বছর নেওয়া হয়েছিল ৩৬০০-৩৮০০ টাকা।বিদ্যুৎ খরচ বেশী তাই। উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল হাজীপাড়া গ্রামের কৃষক আতিয়ার রহমান জানান আমি ৮ থেকে ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করি। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন শেষ হবে। তবে গতবছরের তুলনায় এবার খরচের হিসাব আমি বেশি গুনতে হবে। পানি সেচের খরচ, জমি চাষ করা সার কীটনাশক ও শ্রমিক সহ সবকিছুর দাম বেশি। তার দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রনোধনা হিসাবে হাইব্রিড জাতের ধানে বীজ ও সার পেয়ে খুব উপকার হয়েছে। এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে গতবারের মতো এবারও বোরো ধানের ফলন ভালো হবে বলে আশা করছি।গত বছর ধানের ভালো দাম পেয়েছি। আশা করছি এবারও ভালো দাম পেলে খরচ পুষিয়ে নিতে পারবো বলে আশা করছি। উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের গাবরোল হাজীপাড়া এলাকার বর্গা চাষী গোপাল চন্দ্র রায় বলরন, হামরা ( আমরা) গরীব মানুষ নিজের কোন জমি নাই। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করি। বর্তমানে বাজারে আগের চাইতে সার সহ কৃষির সকল পনের দাম বেশী। তবে আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে এবং ধানের দাম বেশি পেলে খরচ পুষিয়ে নিতে পারবো। বালাগ্রাম এলাকার বোরো ধানের চারা রোপন কাজের শ্রমিক আব্দুল আজিজ বলেন আমরা কয়েকজন মিলে একটা দল তৈরী করেছি। দীর্ঘদিন থেকে আমরা সকল ধানের চারা রোপন করে থাকি। এবার প্রতি বিঘা (৩৩শতক)
বোরো ধানের চারা রোপন করার জন্য ১৩০০ টাকা করে নিচ্ছি। প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চারা রোপন করছি। শৌলমারী ইউনিয়নের এক নারী শ্রমিক জানান আমরা প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা হাজিরা হিসাবে বোর ধানের চারা রোপন করছি। উপজেলা কৃষি অফিসার সুমন আহমেদ জানান চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষেের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমি। ইতি মধ্যে চারা রোপনের কাজ শেষ পর্যায়ে। আর কয়েকদিনের মধ্যে শেষ হবে।তিনি আরও বলেন সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলার প্রায় ১০০০ জন প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বোরো হাইব্রীড ধানের বীজ বিতরন করা হয়েছে। আর উফসি জাতের প্রণোদনা হিসাবে ২০০০ জনের মাঝে সার বিতরণ করা হয়।