ঢাকা ০৬:৫৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫, ১৪ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘তিস্তা নদী’ নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লড়াই কোনো সরকারের বিরুদ্ধে নয়: উত্তরবঙ্গকে বাঁচানোর লড়াই

হীমেল কুমার মিত্র স্টাফ রিপোর্টার
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৯:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ মে ২০২৩ ১২৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক যখন সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আজ (৬ মে) শনিবার বিকেলে রংপুর নগরীর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ’ আয়োজিত গণসমাবেশে
বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘তিস্তা নদী নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লড়াই কোনো সরকারের বিরুদ্ধে নয়, কোনো দলের বিরুদ্ধেও নয়। এই লড়াই তিস্তা নদী বাঁচানোর লড়াই। উত্তরবঙ্গকে বাঁচানোর লড়াই। ’

আজ (৬ মে) শনিবার বিকেলে রংপুর নগরীর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ’ আয়োজিত গণসমাবেশের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের কথা স্পষ্ট, তিস্তার পানি ভারত পাবে তাতে বাধা নেই কিন্তু ১ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে, খাল খনন করে পানি নিয়ে যাবে এটা হতে দেওয়া হবে না। তিস্তা চুক্তি নিয়ে কোনো চক্রান্ত করতে দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী পদ্মাসেতু নির্মাণ করে বিশ্বব্যাংককে দেখিয়ে দিয়েছেন। তিনি বিশ্ব ব্যাংকের আমন্ত্রণে গিয়ে আমাদের পদ্মাসেতুর ছবি উপহার দিয়েছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহবান জানাই পদ্মাসেতুর মতো নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহিপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু তিস্তা নদী নিয়ে চুক্তির উদ্যোগ নিয়েছিলেন কিন্তু ৭৫ পরবর্তী তা আর হয়নি। প্রধানমন্ত্রী আপনি উদ্যোগ নিয়েছেন, অনেক দূর এগিয়েছেন। আপনি পারবেন আমরা বিশ্বাস করি।

একই সমাবেশে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, তিস্তা চুক্তি কিংবা মহাপরিকল্পনা নিয়ে কোনো রাজনীতি, অপরাজনীতি মানা হবে না। তিস্তাবেষ্টিত মানুষের উন্নয়নে, উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, তিস্তার পানি চুক্তি হলেই পানির সমাধান হবে, এমনটি না। তিস্তা মহাপরিকল্পনা ছাড়া কোনো সমস্যার সমাধান হবে না। তাই তিস্তা চুক্তির অপেক্ষায় না থেকে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চাই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উত্তর বঙ্গের মঙা দূর হয়েছে। আমরা আশা করি আগামী বাজেটে তিনি তিস্তা পরিকল্পনার বাজেট দেবেন। তিস্তা মহাপরিকল্পনায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা দরকার। একসময়ের আশির্বাদ তিস্তা এখন উত্তর বঙ্গের অভিশাপ। সেই অভিশাপ থেকে তিস্তা পারের মানুষকে বাচাঁতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

এর আগে গণসমাবেশের উদ্বোধনকালে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, আমরা সরকার বিপক্ষে আন্দোলন করছি না। কিন্তু আমরা নিজেদের উন্নয়ন আর অধিকার আদায়ে সচেতন হয়েছি। আমাদের প্রয়োজনে আমরা আজকে মাঠে নেমেছি।

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের উপর আগামী দিনের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে মানুষ। তিস্তা বেষ্টিত এলাকার জনপ্রতিনিধিরা যদি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভূমিকা না রাখেন, তাহলে তিস্তা পাড়ের মানুষরাও ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিদের লাল কার্ড দেখাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম কানু।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান।

উল্লেখ্য, নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুর বিভাগে আগামী ১ জুন ৫ মিনিট নিরবতা কর্মসূচি পালন করবে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

‘তিস্তা নদী’ নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লড়াই কোনো সরকারের বিরুদ্ধে নয়: উত্তরবঙ্গকে বাঁচানোর লড়াই

আপডেট সময় : ০৫:৪৯:০৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ মে ২০২৩

আজ (৬ মে) শনিবার বিকেলে রংপুর নগরীর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ’ আয়োজিত গণসমাবেশে
বাংলাদেশ ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘তিস্তা নদী নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের লড়াই কোনো সরকারের বিরুদ্ধে নয়, কোনো দলের বিরুদ্ধেও নয়। এই লড়াই তিস্তা নদী বাঁচানোর লড়াই। উত্তরবঙ্গকে বাঁচানোর লড়াই। ’

আজ (৬ মে) শনিবার বিকেলে রংপুর নগরীর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে ‘তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ’ আয়োজিত গণসমাবেশের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের কথা স্পষ্ট, তিস্তার পানি ভারত পাবে তাতে বাধা নেই কিন্তু ১ হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করে, খাল খনন করে পানি নিয়ে যাবে এটা হতে দেওয়া হবে না। তিস্তা চুক্তি নিয়ে কোনো চক্রান্ত করতে দেওয়া হবে না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী পদ্মাসেতু নির্মাণ করে বিশ্বব্যাংককে দেখিয়ে দিয়েছেন। তিনি বিশ্ব ব্যাংকের আমন্ত্রণে গিয়ে আমাদের পদ্মাসেতুর ছবি উপহার দিয়েছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহবান জানাই পদ্মাসেতুর মতো নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহিপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু তিস্তা নদী নিয়ে চুক্তির উদ্যোগ নিয়েছিলেন কিন্তু ৭৫ পরবর্তী তা আর হয়নি। প্রধানমন্ত্রী আপনি উদ্যোগ নিয়েছেন, অনেক দূর এগিয়েছেন। আপনি পারবেন আমরা বিশ্বাস করি।

একই সমাবেশে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, তিস্তা চুক্তি কিংবা মহাপরিকল্পনা নিয়ে কোনো রাজনীতি, অপরাজনীতি মানা হবে না। তিস্তাবেষ্টিত মানুষের উন্নয়নে, উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, তিস্তার পানি চুক্তি হলেই পানির সমাধান হবে, এমনটি না। তিস্তা মহাপরিকল্পনা ছাড়া কোনো সমস্যার সমাধান হবে না। তাই তিস্তা চুক্তির অপেক্ষায় না থেকে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চাই। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উত্তর বঙ্গের মঙা দূর হয়েছে। আমরা আশা করি আগামী বাজেটে তিনি তিস্তা পরিকল্পনার বাজেট দেবেন। তিস্তা মহাপরিকল্পনায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা দরকার। একসময়ের আশির্বাদ তিস্তা এখন উত্তর বঙ্গের অভিশাপ। সেই অভিশাপ থেকে তিস্তা পারের মানুষকে বাচাঁতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

এর আগে গণসমাবেশের উদ্বোধনকালে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, আমরা সরকার বিপক্ষে আন্দোলন করছি না। কিন্তু আমরা নিজেদের উন্নয়ন আর অধিকার আদায়ে সচেতন হয়েছি। আমাদের প্রয়োজনে আমরা আজকে মাঠে নেমেছি।

তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নের উপর আগামী দিনের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে মানুষ। তিস্তা বেষ্টিত এলাকার জনপ্রতিনিধিরা যদি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ভূমিকা না রাখেন, তাহলে তিস্তা পাড়ের মানুষরাও ভোটের সময় জনপ্রতিনিধিদের লাল কার্ড দেখাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

গণসমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন- জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম কানু।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শফিয়ার রহমান।

উল্লেখ্য, নিজস্ব অর্থায়নে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুর বিভাগে আগামী ১ জুন ৫ মিনিট নিরবতা কর্মসূচি পালন করবে তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ।