দেশজুড়ে বাড়ছে কিশোর অপরাধ, সমাধানে পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্রের সম্মিলিত উদ্যোগ জরুরি

- আপডেট সময় : ০৮:৩৪:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৩৮ বার পড়া হয়েছে

মোঃ মকবুলার রহমান
নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি:
দেশজুড়ে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে কিশোর অপরাধ। একসময় অপরাধকে কেবল প্রাপ্তবয়স্কদের কাজ হিসেবে দেখা হলেও সাম্প্রতিক সময়ে নানা অপরাধে কিশোরদের সম্পৃক্ততা বাড়তে থাকায় বিশেষজ্ঞরা এটিকে বড় সামাজিক সংকট হিসেবে দেখছেন।
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, পারিবারিক ভাঙন, দারিদ্র্য, নৈতিক অবক্ষয়, মাদক, প্রযুক্তির অপব্যবহার ও গ্যাং কালচার কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির পেছনে বড় কারণ হিসেবে কাজ করছে।
কেন বাড়ছে কিশোর অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারিবারিক অবহেলা ও ভালোবাসাহীন পরিবেশ কিশোরদের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। এ ছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষার ঘাটতি, পরীক্ষামুখী শিক্ষা ব্যবস্থা এবং স্কুলে সুষ্ঠু পরিবেশের অভাবও তাদের বিপথগামী করছে।
দারিদ্র্য ও বৈষম্যের কারণে অনেক কিশোর জীবিকার জন্য অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। আবার ভোগবাদী সমাজব্যবস্থা ও অর্থলোভের কারণে অনেকেই অপরাধকে সহজ পথ হিসেবে বেছে নিচ্ছে।
সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো মাদক ও গ্যাং কালচার। অপরাধচক্ররা সহজেই কিশোরদের মাদক সরবরাহ, ছিনতাই বা সশস্ত্র হামলার মতো কাজে ব্যবহার করছে। অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার, সহিংস কনটেন্টের প্রতি আসক্তি ও অন্ধ অনুকরণ কিশোরদের অপরাধপ্রবণ করে তুলছে।
সমাধানের পথ কিশোর অপরাধ কমাতে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে বলে মত দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদরা।
পারিবারিক দায়িত্ব: সন্তানের প্রতি বাবা-মায়ের যত্ন, ভালোবাসা, সময় দেওয়া এবং বন্ধুর মতো আচরণ করা জরুরি।
শিক্ষা ব্যবস্থা: শুধু পাঠ্যপুস্তক নয়, নৈতিক শিক্ষা ও চরিত্র গঠনের ওপর জোর দিতে হবে।
খেলাধুলা ও সংস্কৃতি: কিশোরদের খেলাধুলা, সাহিত্য, সংগীত ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে হবে।
মাদক ও গ্যাং দমন: আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কিশোর অপরাধে জড়িত প্রাপ্তবয়স্কদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রযুক্তি ব্যবহারে সচেতনতা: সোশ্যাল মিডিয়া ও ইন্টারনেটের ইতিবাচক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ: কিশোর অপরাধীদের জন্য পুনর্বাসনকেন্দ্র, কাউন্সেলিং ও কর্মমুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কিশোররা একটি জাতির ভবিষ্যৎ। তাই তাদের অপরাধের পথে ঠেলে দেওয়া মানে জাতিকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করা। দমন নয়, বরং সঠিক দিকনির্দেশনা, ভালোবাসা, শিক্ষা ও পুনর্বাসনের মাধ্যমেই কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।




























