ফেনী কারাগার চলে আওয়ামীলীগের নেতা রুহুল আমিনের ইশারায়

- আপডেট সময় : ১২:২৯:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ৪২ বার পড়া হয়েছে

ফখরুল আলম সাজু
ক্রাইম রিপোর্টার:
ফেনীর আলোচিত মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির হত্যা মামলার ফাসির আসামী ও সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিনকে টাকা না দিলেই কোন সেবাই পাচ্ছে না ফেনী কারাগারের আসামীরা, এমন অভিযোগ করেছে কারামুক্ত আওয়ামীলীগ সহ অন্যান্য আসামীরা। ফেনী কারাগার চলে রুহুল আমিনের ইশারায়।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ভূক্তভোগী জানান, কারাগারে প্রবেশ করলেই প্রথমে সকল আসামীকে আমদানি ওয়ার্ডে নিয়ে যায়, ২-৩দিন থাকার পরে ওয়ার্ডে সিপ্ট করে, সিপ্ট করার সময়ে ওয়ার্ডের বেডের জন্য ৩-৫ হাজার টাকা দাবী করে। এই টাকা না দিলে ওয়ার্ডে ও বেড়ে থাকতে দিবে না।
আওয়ামীলীগের নেতা রুহুল আমিনের করা এই সব অনিয়মের বিষয়ে যদি বিরুদ্ধে কারা কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দে, তাহলে ওই আসামীর বিরুদ্ধে নেমে আসে রুহুল আমিন ও কারা কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে হাজারো নির্যাতন।
অনেক আসামীর ক্যাশটেবিল হয়, সেটাতে রুহুল আমিনের অনুমতি লাগে, সঠিক ভাবে অনুমতি নিতে না পারলে সেই ক্যাশ টেবিলও হয় না। কারাগারের ক্যান্টিন থাকার কথা কারা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে, কিন্তু সেই ক্যান্টিন পরিচালনা করেন রুহুল আমিনের ঘনিষ্ট মাহফুজ।
আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা জামিন পাইলেও গেইট গ্রেফতার এড়াতে কারাগারের গড় ফাদার রুহুল আমিনকে দিতে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত। তাহলে উনি জেলা সুপারের সাথে কন্ট্রাক্ট করে সন্ধ্যায় বা রাতে নিরাপদে বের করে দে।
এই টাকা না দিলে বাহিরে হতে দিবে না এবং জেল গেইটে পূর্ণরায় গ্রেফতার করাবে এবং নরমাল মামলা থেকে হত্যা মামলার আসামী করে দিবে। ভিতরে কামপাশ পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও রুহুল আমিনকে টাকা দিতে হয়। টাকা দিলে সব সুযোগ সুবিধা পাবে না দিলে পাবে না।
কারাগারের ভিতরে দুইজন সিআইডি দায়িত্ব পালন করে, একজন ডিসির ও অন্যজন জেলা সুপারের। তারা দুইজনই রুহুল আমিনের দেহরক্ষির মত সবসময় তার পাশেই থাকে। কোন আসামীকে কিভাবে নির্যাতন করে টাকা আদাই করা যায় সেই প্লান করেন।
এর মধ্যেই যদি কেউ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে কথা বলে তাহলে তার স্বাক্ষাত বন্ধ করে দে এবং টেলিফোনে পরিবারের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দে। রুহুল আমিনের নিদেশেই এই টাইম টেবিল নিয়ন্ত্রিত হয়।
পুরো কারাগারটিই নিয়ন্ত্রণ করে আওয়ামীলীগের নেতা ও ফাসির আসামী রুহুল আমিন।
ফেনী জেলা কারাগারে জেল সুপার ও জেলারের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে একটি সিন্ডিকেট। কারাগারে সিট বাণিজ্যসহ বিভিন্ন বন্দিদের কাছে আইনের দোহাই দিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। এর নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কারা কর্তৃপক্ষের পকেটে যায়।
জানা যায়, আসামিরা আদালত থেকে জামিন পেলেও তাদের মুক্তি দিতে নানারকম টালবাহানা করে জেল সুপার ও জেলার। এমনকি আসামির মুক্তির সময়েই গুনতে হয় টাকা। এমনকি কারাগারের ভেতরেও চলে বিভিন্ন রকম বৈষম্য। টাকা দিলেই ভালো জায়গা, বিশেষ করে মেডিকেল সুবিধায় থাকতে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। তবে ফেনী জেলা পুলিশ সুপারের গ্রীণ সিগন্যাল পেলেও বার বার আসামীকে গ্রেফতার করার ঘটনাও ঘটেছে ফেনী কারাগারে।
দীর্ঘদিন ধরেই ফেনী জেলা কারাগারে আসামি দেখতে টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। স্বজন দেখার কথা বলে একজন কারাবন্দিকে দেখতে ১৫০০ টাকা দিয়েছি কারারক্ষীকে ।
এ বিষয়ে ফেনী জেলা সুপারের সাথে কথা বলতে উনার মোবাইলে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
এ বিষয়ে ফেনী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান এর সাথে কথা বললে তিনি জানান এমন কোন অভিযোগ কেউ করেনি, যদি এ ধরনের কোন কিছু ঘটে থাকে তাহলে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



























