বই জ্ঞানের সোনালি আলো,চেতনার দিগন্ত।

- আপডেট সময় : ০৬:০৭:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ৬৯ বার পড়া হয়েছে

- জাহেদুল ইসলাম আল রাইয়ান
বই শুধু কাগজের পাতায় বাঁধা কিছু শব্দ নয়, বই হলো চেতনার দিগন্ত, জ্ঞানের সোনালি আলো। বই মানুষের মনের আয়না, যেখানে প্রতিফলিত হয় সভ্যতার ইতিহাস, ভবিষ্যতের স্বপ্ন, জীবনের গভীরতম দর্শন। বই-ই একমাত্র সঙ্গী, যা একাকীত্বে সাহচর্য দেয়, অন্ধকারে আলো দেখায়, অবসাদে সান্ত্বনা দেয়।
যে জাতি বইকে ভালোবাসে, সে জাতি বেঁচে থাকে যুগের পর যুগ, সভ্যতার মুকুট হয়ে জ্বলজ্বল করে। আর যে জাতি বই বিমুখ, সে ধীরে ধীরে হারিয়ে যায় ইতিহাসের ধুলোয়। জ্ঞানীরা বলে গেছেন— বই পড়ার মাধ্যমেই মানুষ আপন সত্তাকে চিনতে শেখে, সত্যের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে।
কিন্তু আজকের দিনে বই যেন শুধুই পরীক্ষার খাতায় কিছু লিখে আসার মাধ্যম! শিক্ষার্থীরা জ্ঞানের গভীরে ডুব দেয় না, বরং পরীক্ষার আগে শব্দ গলাধঃকরণ করে খাতায় উগরে দেয়। সেসব শব্দ পরে কোথায় উড়ে যায়, তার খোঁজ আর মেলে না। অথচ বইকে যদি অন্তরের মণিকোঠায় জায়গা দেওয়া যায়, তবে তা হয়ে ওঠে এক অমূল্য রত্ন, যা কখনও হারায় না।
বই শুধু বিদ্যা নয়, বই অনুভূতি। বই হাসায়, কাঁদায়, ভাবায়— হৃদয়ের গভীরে এক অনির্বচনীয় আলো জ্বালিয়ে দেয়। যে বই পড়ে, সে পৃথিবীকে জানে; যে বই পড়ে না, সে দৃষ্টির সামনে থেকেও অন্ধকারে ডুবে থাকে।
ডাক্তার বই পড়ে জীবন বাঁচাতে, উকিল বই পড়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করতে, শিক্ষক বই পড়ে শিক্ষা দিতে, আর প্রকৃত পাঠক বই পড়ে আত্মাকে আলোকিত করতে। বই কেবল বিদ্যার আধার নয়, এটি মানব মনের খোরাক। যেমন পুষ্টিকর খাবার দেহকে সবল রাখে, তেমনি বই চিন্তার দুয়ার খুলে দেয়, বুদ্ধিকে প্রখর করে, জীবনকে অর্থবহ করে তোলে।
যাঁরা পৃথিবীতে স্মরণীয় হয়ে আছেন, তাঁরা কেউ বইবিহীন ছিলেন না। তাঁদের জ্ঞান, তাঁদের সৃষ্টি, তাঁদের মহত্ত্ব সবই বইয়ের পৃষ্ঠায় গাঁথা। শত শত বছর আগের ইতিহাস আমরা বইয়ের মাধ্যমে জানি, ভবিষ্যতের পথও বইয়ের মাধ্যমে খুঁজে নিতে হয়।
তাই বইকে অবহেলা নয়, ভালোবাসতে হবে। বইয়ের কাছে যেতে হবে, তার গভীরে ডুব দিতে হবে। বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, কারণ—
“যেমন পুষ্টিকর খাবার দেহের জন্য অপরিহার্য,
তেমনি বই পড়া মানসিক উৎকর্ষের জন্য অপরিসীম প্রয়োজন।”
লেখক, শিক্ষার্থী, আল- আজহার বিশ্ববিদ্যালয়,কায়রো, মিশর