স্বামীকে উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনায় স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

- আপডেট সময় : ১২:১১:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১৮৯ বার পড়া হয়েছে

মোঃ তোফায়েল আহমেদ
কুমিল্লার দেবিদ্বারে অপহরণের ৭ দিনেও স্বামী মো. সোহেল মিয়াকে (২৮) উদ্ধার করতে না পেরে অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্ত্রী ও ভুক্তভোগী।
মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় দেবিদ্বার উপজেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওই অভিযোগ তুলে ধরেন অপহৃত সোহেল মিয়ার স্ত্রী হালিমা খাতুন।
সংবাদ সম্মেলনে দেবিদ্বার উপজেলার খলিলপুর গ্রামের দরিদ্র রিকশাচালক হারুন মিয়ার মেয়ে বিউটিশিয়ান হালিমা খাতুন বলেন, আমার বাবা চট্টগ্রামে থাকায় সেখানেই বিউটি পার্লারের কাজ শিখি, পরবর্তীতে দেবিদ্বার এসে ‘মৌসুমী গ্লামার ওয়ার্ল্ড বিউটি পার্লারে’ চাকরি নেই, এখানে প্রায় ১০ বছর ধরে কাজ করে আসছি। এরই মধ্যে ৭ বছর পূর্বে ব্রাক্ষণপাড়া উপজেলার বেজোড়া গ্রামের মো. সোহেল মিয়ার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। তারপর থেকে পার্লারের মালিক মৌসুমী ও তার স্বামী নজরুল ইসলামের সঙ্গে আমার সম্পর্কের অবনতি ঘটতে থাকে। আমি অন্য পার্লারে কাজ করতে চাইলে দেবিদ্বার কাজী বাড়ির যুবলীগ নেতা সুমন কাজী ও তার বাহিনীর হুমকিতে পড়ি।
তিনি বলেন, আমাকে নানা অভিযোগে পুলিশের ভয় দেখানো হয়, আমার থেকে ননজুডিশিয়াল ৩০০ টাকার খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখেন। কাজী সুমন তার দলবল নিয়ে পার্লারে আসে আড্ডা দেন। আমি প্রতিবাদ করলে ওই স্ট্যাম্প দিয়ে একাধিকবার পুলিশের হুমকি দেন এবং নির্যাতন করে গৃহবন্দি করে রাখে। আমার আড়াই বছরের শিশু বাচ্চা আদিল ইসলামের অসুস্থতায় চিকিৎসা করতেও দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, পরে কুমিল্লা (উ.) জেলা যুব মহিলা লীগ সদস্য তানিয়া সুলতানা বিথি ও আমেনা আক্তার সুমির সহযোগিতা চাইলে তারা আমাকে ওই পার্লার থেকে উদ্ধার করেন। মৌসুমী আক্তারের ভাড়াটে সহযোগী কাজী সুমন ও তার নেতৃত্বাধীন বাহিনী এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। গত ২২ তারিখ আমার স্বামী সোহেল মিয়া এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করতে গেলে এবং ৯ মাসের বকেয়া বেতন চাইতে গেলে- কাজী সুমন, মৌসুমী ও তার স্বামী নজরুল আমার স্বামীকে হুমকি দিয়ে বলে এ ঘটনার জের তোমাকে পোহাতে হবে। ওই দিন বেলা ২টা থেকে আমার স্বামী নিখোঁজ হয়ে যান। আমি অনেক খোঁজাখুঁজি করে অবশেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দেবিদ্বার থানায় অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে আমার স্বামীকে অপহরণ ও গুম করার অভিযোগে অভিযোগপত্র দাখিল করি। এখন পর্যন্ত পুলিশ আমার স্বামীকে উদ্ধার করতে পারেনি। এ অবস্থায় স্বামী উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মৌসুমী গ্লামার ওয়ার্ল্ড বিউটি পার্লারের পরিচালক মৌসুমী আক্তারের ফোনে বাববার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- হালিমা খাতুনের বাবা মো. হারুন মিয়া, মা নাছিমা বেগম, নানি মমতাজ বেগম এবং কুমিল্লা (উঃ) জেলা যুব মহিলা লীগ সদস্য তানিয়া সুলতানা বিথি ও আমেনা আক্তার সুমি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা কাজী সুমন জানান, বাসা ও বাড়ি নির্মাণে মৌসুমী ও তার স্বামীর কাছ থেকে খালি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে ৫ লাখ টাকা ধার নেয়, ওই টাকা না দেওয়ার অজুহাতে এ সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার ওসি মো. নয়ন মিয়া জানান, অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি অপহরণ/গুম কিংবা আত্মগোপনে আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে আমাদের সময় লাগবে। তদন্তের পরে নিশ্চিতভাবে বলা যাবে। তবে অভিযোগকারী পার্লারের বাহিরেও তার পারিবারিক কাজ করা নিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।