ঢাকা ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সাজ্জাদুল মিরাজের উপর হামলায় ৭জন গ্রেফতার। নরসিংদীতে ১২ ঘন্টার মধ্যেই মিললো স্বামী-স্ত্রী দুজনের মরদেহ দ্রুত তিস্তা মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন চাই- ডা.শফিকুর রহমান ফেনী সীমান্তে চোরাচালান বিরোধী বিশেষ অভিযানে মালামাল জব্দ করেছে ফেনী ব্যাটালিয়ন ৪ বিজিবি। ৬শ কর্মী মিলে ঢাকা যাত্রাবাড়ী-সাইনবোর্ড মহাসড়কে পরিচ্ছন্নতা অভিযান। রাজউকের অভিযানে তিন ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ ও জরিমানা। নৌকাডুবিতে নিখোঁজের ১৫ ঘণ্টা পর শীতলক্ষা নদী থেকে স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার রক্ত মিশিয়ে মাংস বিক্রি, ২ হাজার টাকা জরিমানা আমার প্রশ্ন, হাসিনুর কি মানুষ নয়? মানুষ হয়ে মানুষের বুকের ওপর পা দিয়ে গুলি করে কীভাবে হত্যা করে? ওয়ারেন্টি দিচ্ছি, দেশের মানুষ নিরাপত্তা ও সম্মান নিয়ে বাঁচবে’ : ডা. শফিকুর রহমান ঝটিকা মিছিল নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কসবায় শশুর বাড়িতে স্ত্রী ও শ্যালিকাকে খুন করে পালিয়েছে যুবক

এসএম নাইমুল ইসলাম জিহাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৯:১১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫ ৩৬ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক যখন সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

এসএম নাইমুল ইসলাম জিহাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় পারিবারিক বিরোধের জের ধরে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে এসে স্ত্রী ও শ্যালিকাকে খুন করে পালিয়ে গেছে আমীর হোসেন-(২৮) নামে এক যুবক।

সোমবার (৩ মার্চ) ভোর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কসবা উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী ধজনগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, ধজনগর গ্রামের মরহুম রওশন আলীর মেয়ে জ্যোতি আক্তার-(১৯) ও স্মৃতি আক্তার-(১৩)। ঘটনার পর পর জ্যোতি আক্তারের স্বামী আমির হোসেন পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
নিহতদের স্বজন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত দেড় বছর আগে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে আমির হোসেনের সাথে জ্যোতি আক্তারের বিয়ে হয়।

জ্যোতি আক্তারের পিতা রওশন আলী বেঁচে নেই। মা একটি মামলার কারনে জেল হাজতে রয়েছেন।

তাই বিয়ের পর থেকেই জ্যোতি আক্তার তার পিতার বাড়িতে বসবাস করতো। বাড়িতে জ্যোতির সাথে থাকতো তার ছোট বোন স্মৃতি আক্তার ও ছোট ভাই জাহিদ হোসেন। জ্যোতি আক্তারের বড় ভাই থাকেন সৌদি আরবে।

গত ১ সপ্তাহ আগে জ্যোতির স্বামী আমির হোসেন এখানে বেড়াতে আসেন। রোববার সন্ধ্যায় পরিবারের সবার সাথে ইফতার করেন। গভীর রাতে পারিবারিক বিষয় নিয়ে জ্যোতির সাথে আমির হোসেনের ঝগড়া হয়।

এ ঘটনার জের ধরে সোমবার ভোররাতে স্ত্রী জ্যোতি আক্তার ও শ্যালিকা স্মৃতি আক্তারকে তাদেও শয়নকক্ষে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় আমির হোসেন।

সোমবার ভোর রাতে জ্যোতির ছোট ভাই জাহিদ হোসেন ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। দুই বোন অজ্ঞান অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন, ঘরে ভগ্নিপতি আমির হোসেন নেই। এ সময় জাহিদ চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এসে ঘরে জ্যোতি ও স্মৃতির লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল কাদের, পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার দাসসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও তাদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।

নিহতদের চাচাতো বোন রিঙ্কু আক্তার বলেন, আমার দুই বোনকে শ্বাসরুদ্ধ করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে জ্যোতির স্বামী আমির হোসেন। আমরা এই নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার চাই। ঘাতকের ফাঁসি চাই।

হত্যাকান্ডের শিকার জ্যোতি ও স্মৃতির মামি বিলকিস আক্তার জানান, আমির হোসেন এমন ঘটনা ঘটাবে আমরা চিন্তাও করিনি। সে তাদেরকে হত্যা করে কৌশলে পালিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। ঘাতকের ফাঁসি চাই।

নিহত দুই বোনের ছোট ভাই জাহিদ হোসেন বলেন, সকালে আপারা ঘুম থেকে উঠতে দেরি দেখে আমি তাদের শয়ন কক্ষে গিয়ে ডাকা ডাকি করি সাড়াশব্দ না পেয়ে আপার শরীরে থাকা লেফ সরিয়ে দেখি দুই আপা অচেতন। তারা কোনো সাড়াশব্দ করছে না। পরে এলাকার লোকজনকে ডেকে আনি। দুলা ভাই তাদেরকে খুন করে পালিয়ে গেছে। আমি এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারনা করছি। তিনি বলেন, তাদেরকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ঘাতক আমীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করার হত্যাকান্ডের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কসবায় শশুর বাড়িতে স্ত্রী ও শ্যালিকাকে খুন করে পালিয়েছে যুবক

আপডেট সময় : ০৯:১১:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

এসএম নাইমুল ইসলাম জিহাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় পারিবারিক বিরোধের জের ধরে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে এসে স্ত্রী ও শ্যালিকাকে খুন করে পালিয়ে গেছে আমীর হোসেন-(২৮) নামে এক যুবক।

সোমবার (৩ মার্চ) ভোর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কসবা উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী ধজনগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, ধজনগর গ্রামের মরহুম রওশন আলীর মেয়ে জ্যোতি আক্তার-(১৯) ও স্মৃতি আক্তার-(১৩)। ঘটনার পর পর জ্যোতি আক্তারের স্বামী আমির হোসেন পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ নিহতদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
নিহতদের স্বজন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত দেড় বছর আগে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে আমির হোসেনের সাথে জ্যোতি আক্তারের বিয়ে হয়।

জ্যোতি আক্তারের পিতা রওশন আলী বেঁচে নেই। মা একটি মামলার কারনে জেল হাজতে রয়েছেন।

তাই বিয়ের পর থেকেই জ্যোতি আক্তার তার পিতার বাড়িতে বসবাস করতো। বাড়িতে জ্যোতির সাথে থাকতো তার ছোট বোন স্মৃতি আক্তার ও ছোট ভাই জাহিদ হোসেন। জ্যোতি আক্তারের বড় ভাই থাকেন সৌদি আরবে।

গত ১ সপ্তাহ আগে জ্যোতির স্বামী আমির হোসেন এখানে বেড়াতে আসেন। রোববার সন্ধ্যায় পরিবারের সবার সাথে ইফতার করেন। গভীর রাতে পারিবারিক বিষয় নিয়ে জ্যোতির সাথে আমির হোসেনের ঝগড়া হয়।

এ ঘটনার জের ধরে সোমবার ভোররাতে স্ত্রী জ্যোতি আক্তার ও শ্যালিকা স্মৃতি আক্তারকে তাদেও শয়নকক্ষে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে পালিয়ে যায় আমির হোসেন।

সোমবার ভোর রাতে জ্যোতির ছোট ভাই জাহিদ হোসেন ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। দুই বোন অজ্ঞান অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন, ঘরে ভগ্নিপতি আমির হোসেন নেই। এ সময় জাহিদ চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এসে ঘরে জ্যোতি ও স্মৃতির লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে সকালে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল কাদের, পরিদর্শক (তদন্ত) রিপন কুমার দাসসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ও তাদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।

নিহতদের চাচাতো বোন রিঙ্কু আক্তার বলেন, আমার দুই বোনকে শ্বাসরুদ্ধ করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে জ্যোতির স্বামী আমির হোসেন। আমরা এই নির্মম হত্যাকান্ডের বিচার চাই। ঘাতকের ফাঁসি চাই।

হত্যাকান্ডের শিকার জ্যোতি ও স্মৃতির মামি বিলকিস আক্তার জানান, আমির হোসেন এমন ঘটনা ঘটাবে আমরা চিন্তাও করিনি। সে তাদেরকে হত্যা করে কৌশলে পালিয়ে গেছে। যাওয়ার সময় নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই। ঘাতকের ফাঁসি চাই।

নিহত দুই বোনের ছোট ভাই জাহিদ হোসেন বলেন, সকালে আপারা ঘুম থেকে উঠতে দেরি দেখে আমি তাদের শয়ন কক্ষে গিয়ে ডাকা ডাকি করি সাড়াশব্দ না পেয়ে আপার শরীরে থাকা লেফ সরিয়ে দেখি দুই আপা অচেতন। তারা কোনো সাড়াশব্দ করছে না। পরে এলাকার লোকজনকে ডেকে আনি। দুলা ভাই তাদেরকে খুন করে পালিয়ে গেছে। আমি এই হত্যাকান্ডের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদের বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে ধারনা করছি। তিনি বলেন, তাদেরকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। ঘাতক আমীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করার হত্যাকান্ডের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।