মেয়রের বিরুদ্ধে দুনীতি :অর্থ লুটপাটের অভিযোগে,অনাস্থা কাউন্সিলরদের
- আপডেট সময় : ১১:৪৫:৫৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০২৩ ৮০ বার পড়া হয়েছে
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবু সালেহ মোঃ তাজিমুল ইসলাম শামীমের
বিরুদ্ধে ভুয়া টেন্ডার দেখিয়ে কাজ করানো,টেন্ডার আহবান না করা, সরকার
বিভিন্ন বরাদ্দ করা অর্থ লোপাট , ক্ষমতার অপব্যাবহার করে একক কতৃত্ব প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ব্যাক্তিগত প্রতিষ্ঠানে পরিনত করা সহ প্রায় ১০ কোটি
টাকা আত্মীসাত ও লুটপাট করার গুরুতর অভিযোগ করেছে পীরগঞ্জ
পৌরসভার কাউন্সিলরবৃন্দ।এ ব্যাপারে মেয়রের বিভিন্ন অভিযোগ এনে তার
বিরুদ্ধে ১১জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব এনে লিখিত ভাবে ব্যবস্থা
গ্রহনের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের স্পিকারসহ স্থানীয়
সরকার বিভাগ রংপুরের উপ পরিচালকের কাছে আবেদন জানিয়েছে। আজ (৩ এপ্রিল )সোমবার রংপুর নগরীর জাহাজ কোম্পানির মোড় একটি সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগ নেতা পৌর মেয়র শামীমের বিরুদ্ধে সুনিদৃষ্ট অভিযোগ এনে
দ্রুত তদন্ত করে তাকে অপসারনের দাবি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে
অনাস্থা স্থাপনকারী ১১ কাউন্সিলরের মধ্যে ৮ জন উপস্থিত ছিলেন। তিনজন
কাউন্সিলর অসুস্থতার কারনে আসতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।তবে
পৌরসভায় ১২ কাউন্সিলর এর মধ্যে ১১জনের স্বাক্ষর করে আবেদন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন পীরগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর
ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলমগীর। লিখিত অভিযোগে জানানো হয় পীরগঞ্জ পৌরসভার গত ২৮ নভেম্বর ২০২১ সালে নির্বাচনের মাধ্যমে মেয়র শামীম সহ ১২ জন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়।২১/১২/২১ইং তারিখে রংপুর বিভাগীয়
কমিশনারের কাছে শপথ বাক্য পাঠ করে দায়িত্ব গ্রহন করা হয়। কিন্তু অত্যান্ত দুঃখের বিষয় প্রায় দেড় বছর অতিবাহিত হতে চলেছে পৌর
মেয়র শামীম পৌর পরিষদের মাসিক সভা করেন তার ইচ্ছে মতো।সভার আগে তিনি কাউন্সিলরদের কোন নোটিশ দেননা। সভার ২/৩ ঘন্টা আগে তার পিএর
মাধ্যমে সভায় উপস্থিত হবার কথা জানানো হয়। সভার দিন ৪/৫ ঘন্টা পর সভায় মেয়র উপস্থিত হয়ে কোন আলোচনা না করে সভার রেজুলেশন না লিখে তাদেরপরবর্তীতে সভার সিদ্ধান্তের কপি তাদের দেয়াও হয়না জানানো হয়না।
এ বিষয়ে অনেকবার মেয়রকে বলার পরেও কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করায় গত
০১/০১/২৩ইং তারিখে সকল কাউন্সিলর মেয়রের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়ে
বিগত সভার সিদ্ধান্ত লিখিত ভাবে জানানোর জন্য আবেদন করেও সাড়া
মেলেনি।
সভায় মেয়রের বিরুদ্ধে দুনীতি অভিযোগ উত্থাপন করে বলা হয় ২০১৯-০২০
অর্থ বছরে টেন্ডার আইডি ২৭৮৪৪৭ মুলে পীরগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর
ওয়ার্ডের পচাকান্ত মৌজার রাস্তা সংস্কার ও নির্মান কাজ করা হয়।
যা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মন্ডল ট্রেডাস এর মাধ্যমে ৪৫ লাখ ৬৫ হাজার
৮শ ৩৮ টাকার কার্যাদেশ দেয়া হয়।ওই কাজের ওই পরিমান বিল উক্ত ঠিকাদারকে প্রদান করা হয়।একই কাজ টেন্ডার আইডি ৩০১৯৬১ মুলে পুনরায় টেন্ডার
আহবান করানো দেখিয়ে কোন কাজ না করেই ৪২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করা
হয়।
এ ছাড়াও ২০২১-২২ অর্থ বছরে আর্থিক সহায়তা খাতে ২১ লাখ টাকা
উত্তোলন করে লোপাট চিকিৎসা খাতে ও বিবিধ খাতে অর্থ সহায়তা
দেখিয়ে অর্থ লুট, বিভিন্ন দিবস উদযাপন খাতের বিল উপজেলা পরিশোধ
কর্তৃক ব্যায় করা হলেও পৌর তহবিল থেকে ভুয়া বিল দেখিয়ে লুটপাটের
অভিযোগ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন কাউন্সিলররা চলতি
বছরের জানুয়ারী থেকে এখন পর্যন্ত পৌরপরিষদের কোন সভা আহবান না করে
একক ক্ষমতা বলে বিভিন্ন কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার ড, শিরিন
শারমিন চৌধুরীর সাথে দেখা করে লিখিত অভিযোগ প্রদান করে তার বিচার দাবি করেছেন বলে জানান।সার্বিক বিষয়ে জানতে পৌর মেয়র তাজিমুল ইসলাম শামীমের মোবাইল নম্বরে অন্তত নাম্বারে-০১৭১৭২৭৭৭২৮ ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
স্থানীয় সরকার রংপুর বিভাগের উপ-পরিচালক জিলুফা ইয়ামিনের সাথে
যোগাযোগ করা হলে তিনি ১১ জন কাউন্সিলরের স্বাক্ষর যুক্ত বিভিন্ন
অভিযোগ সম্বলিত মেয়রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পেয়েছেন জানিয়ে
বলেন এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।