ঢাকা ০৬:৫৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের জনজীবন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের হাতে তুলে দিতে চাই : বাংলাদেশ জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্ম জয়ন্তী: মধুমেলা উপলক্ষে সাতক্ষীরায় বন্ধুসভার পাঠচক্র‍ বিজিবির অভিযানে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের মিয়ানমারের ৩১ টি গরু জব্দ! গুম খুনের প্রতিটি মামলায় হুকুমের আসামী থাকবে হাসিনা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি জলঢাকায় জমি দখল ও থানায় মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন গাজীপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেদখলের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন বিক্ষোভ ভেপুরাইজার মেশিন ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযান সৈয়দপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এ বছর ৫৩ জন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন

নড়াইলের শান্তা সেনের মেডেকেল শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করতে দারিদ্র বাবা-মায়ের দুঃশিন্তা

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ০৭:১৯:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১৪০ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক যখন সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি
নড়াইলের শান্তার মেডেকেল শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করতে দারিদ্র বাবা-মায়ের দুঃশিন্তা।
দারিদ্র বাঁধা হতে পারেনি শান্তার একাডেমিক ফলাফল ও মেডিকেলে ভর্তি হতে। এবার বাবা-মায়ের দুঃশিন্তা কিভাবে মেয়ে শিক্ষা জীবন শেষ করবে। বাবার জমি বিক্রি ও দিন মজুরি, মায়ের দুধ বিক্রি এবং একমাত্র ভায়ের টিউশনির টাকায় এতোদিন ক্লাস ও থেকে এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়ার খরচ চললেও এখন কিভাবে মেডেকেলের শিক্ষা জীবন শেষ করবে সে চিন্তা এখন মাথায়। এ জন্য তার বাবা-মা, আতœীয়-স্বজন সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের মিতনা গ্রামের দরিদ্র কৃষি শ্রমিক শিবু সেন ও শিবানী সেনের এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে সমিরণ ও কন্যা শান্তাকে লেখাপড়া শেখাতে গিয়ে বাবার একমাত্র সম্বল ২৫ শতাংশ ফসলি জমি ৪ বছর আগে বিক্রি করে। এখন শুধু বাড়ির ৫শতাংশ জমি অবশিষ্ট রয়েছে। বাবা অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে। মা গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে গরুর দুধ সংগ্রহ করে প্রতিদিন দীর্ঘ ১২ মাইল অতিক্রম করে নড়াইল শহরে এসে বিক্রি করে। এভাবে বাবা-মা অক্লান্ত পরিশ্রম করে শান্তাকে চিকিৎসক করতে অমানুষিক পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। একমাত্র ভাই সমিরণ নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজে অনার্স পড়ার ফাঁকে ফাঁকে টিউশনি করেও বোনকে লেখাপড়ায় সহায়তা করছে।
শান্তা এসএসসিতে সদরের চাঁচড়া নাছেল উদ্দিন বিশ^াস মাঃ বিঃ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবং এইচএসসিতে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এ বছর পাবনা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছে। প্রথমে তার মেিেডকেলে ভর্তি হবার কোনো অর্থ ছিল না। এ সময় স্থানীয় মিতনা ও এগারখান গ্রামের কয়েকজন এগিয়ে আসেন। তাদের প্রচেষ্টায় শান্তার ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। এখন তার পরিবারের চিন্তা বাকি শিক্ষা জীবন কিভাবে সম্পন্ন করবে।
মেডেকেলের ছাত্রী শান্তা সেন বলেন, আমার ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবার। সে স্বপ্নের একটি ধাপ পূরণ হয়েছে। কিন্তু এখন উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করতে ৫ বছরের কোর্স এবং ১ বছরের ইন্টার্নশিপ। এই দীর্ঘ সময়ে শিক্ষা জীবনের ব্যয় বহনের ক্ষমতা আমার পরিবারের নেই। এ জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চিকিৎক হলে আমার মতো গরীব মেধাবী পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়ার বিষয়ে সাহায্য করবো এবং গরীব মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা দেবার ইচ্ছা রয়েছে।
শান্তার মা শিবানী সেন বলেন, এতোদিন দুধ বিক্রি করে এবং অন্যভাবে অর্থ সংগ্রহ করে মেয়েকে এই পর্যন্ত এনেছি। চেনা পরিচিত আতœীয় স্বজন কেউ কেউ সাহায্যও দিয়েছেন। সামনেতো অনেক খরচ। এখন যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতো তাহলে কোনো দুঃচিন্তা থাকতো না।
শান্তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া তার (শান্তার) চাচা নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিপুল সেন (০১৭৯৮-৭৪৪৬৯৯) ও নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কেয়া রেণু রায় বলেন, অনেক কষ্ট স্বীকার করে শান্তার বাবা-মা তাকে এ পর্যন্ত এনেছেন। এখন শান্তার উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করতে সমাজের উচ্চবিত্ত বা কোনো প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নড়াইলের শান্তা সেনের মেডেকেল শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করতে দারিদ্র বাবা-মায়ের দুঃশিন্তা

আপডেট সময় : ০৭:১৯:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি
নড়াইলের শান্তার মেডেকেল শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করতে দারিদ্র বাবা-মায়ের দুঃশিন্তা।
দারিদ্র বাঁধা হতে পারেনি শান্তার একাডেমিক ফলাফল ও মেডিকেলে ভর্তি হতে। এবার বাবা-মায়ের দুঃশিন্তা কিভাবে মেয়ে শিক্ষা জীবন শেষ করবে। বাবার জমি বিক্রি ও দিন মজুরি, মায়ের দুধ বিক্রি এবং একমাত্র ভায়ের টিউশনির টাকায় এতোদিন ক্লাস ও থেকে এইচএসসি পর্যন্ত লেখাপড়ার খরচ চললেও এখন কিভাবে মেডেকেলের শিক্ষা জীবন শেষ করবে সে চিন্তা এখন মাথায়। এ জন্য তার বাবা-মা, আতœীয়-স্বজন সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন। উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি জানান, নড়াইল সদর উপজেলার তুলারামপুর ইউনিয়নের মিতনা গ্রামের দরিদ্র কৃষি শ্রমিক শিবু সেন ও শিবানী সেনের এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে সমিরণ ও কন্যা শান্তাকে লেখাপড়া শেখাতে গিয়ে বাবার একমাত্র সম্বল ২৫ শতাংশ ফসলি জমি ৪ বছর আগে বিক্রি করে। এখন শুধু বাড়ির ৫শতাংশ জমি অবশিষ্ট রয়েছে। বাবা অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে। মা গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে গরুর দুধ সংগ্রহ করে প্রতিদিন দীর্ঘ ১২ মাইল অতিক্রম করে নড়াইল শহরে এসে বিক্রি করে। এভাবে বাবা-মা অক্লান্ত পরিশ্রম করে শান্তাকে চিকিৎসক করতে অমানুষিক পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। একমাত্র ভাই সমিরণ নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজে অনার্স পড়ার ফাঁকে ফাঁকে টিউশনি করেও বোনকে লেখাপড়ায় সহায়তা করছে।
শান্তা এসএসসিতে সদরের চাঁচড়া নাছেল উদ্দিন বিশ^াস মাঃ বিঃ থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এবং এইচএসসিতে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এ বছর পাবনা সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছে। প্রথমে তার মেিেডকেলে ভর্তি হবার কোনো অর্থ ছিল না। এ সময় স্থানীয় মিতনা ও এগারখান গ্রামের কয়েকজন এগিয়ে আসেন। তাদের প্রচেষ্টায় শান্তার ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। এখন তার পরিবারের চিন্তা বাকি শিক্ষা জীবন কিভাবে সম্পন্ন করবে।
মেডেকেলের ছাত্রী শান্তা সেন বলেন, আমার ছোট বেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হবার। সে স্বপ্নের একটি ধাপ পূরণ হয়েছে। কিন্তু এখন উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করতে ৫ বছরের কোর্স এবং ১ বছরের ইন্টার্নশিপ। এই দীর্ঘ সময়ে শিক্ষা জীবনের ব্যয় বহনের ক্ষমতা আমার পরিবারের নেই। এ জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। চিকিৎক হলে আমার মতো গরীব মেধাবী পরিবারের সন্তানদের লেখাপড়ার বিষয়ে সাহায্য করবো এবং গরীব মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা দেবার ইচ্ছা রয়েছে।
শান্তার মা শিবানী সেন বলেন, এতোদিন দুধ বিক্রি করে এবং অন্যভাবে অর্থ সংগ্রহ করে মেয়েকে এই পর্যন্ত এনেছি। চেনা পরিচিত আতœীয় স্বজন কেউ কেউ সাহায্যও দিয়েছেন। সামনেতো অনেক খরচ। এখন যদি কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিতো তাহলে কোনো দুঃচিন্তা থাকতো না।
শান্তার প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়া তার (শান্তার) চাচা নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বিপুল সেন (০১৭৯৮-৭৪৪৬৯৯) ও নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক কেয়া রেণু রায় বলেন, অনেক কষ্ট স্বীকার করে শান্তার বাবা-মা তাকে এ পর্যন্ত এনেছেন। এখন শান্তার উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করতে সমাজের উচ্চবিত্ত বা কোনো প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন।