ঢাকা ১২:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
দেশি-বিদেশি সুগভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় শেখ হাসিনা সরকারকে হটিয়েছে : নানক রংপুরে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি রুখতে দলীয় অভিযোগ সেল গঠন পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করায় রাষ্ট্রপতির অভিনন্দন এ দেশে মসজিদের মতো মন্দিরও পাহারা দিতে হবে না জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করতে হবে-জানে আলম খোকা লালপুরে প্রবাসীর স্ত্রী ও ছেলেকে মারপিটের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন ঝালকাঠির রাজাপুরে স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে মায়ের সংবাদ সম্মেলন জনতার পুলিশ গঠনে সহযোগিতা চাইলেন এসপি বাস ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫ আহত ২০ বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

ধামইরহাটে এবারে দ্বিগুণ সরিষার আবাদ, ফুটেছে কৃষকের মুখে হাঁসি

মোঃ এ কে নোমান, ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : ০৯:২৮:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪ ১৯৫ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক যখন সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মোঃ এ কে নোমান, ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর ধামইরহাটে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দোলা দিচ্ছে সরিষার ফুলের বাতাসে ৷ দেখে মনে হবে হলুদ রঙের শাড়ি পরে যেন কোন বিয়ের হলুদ সন্ধ্যা চলছে । ধামইরহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে এমনই চিত্র দেখা যাচ্ছে অহরহ ৷

উপজেলার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় সরিষার হলদে ফুলের ফসলে মাঠের পর মাঠ ছেঁয়ে গেছে । মাঠের দিকে তাকালে দিগন্তজুড়ে যেন হলুদ গালিচা বিছানো হয়েছে। চলতি মৌসুমে সরিষা চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা এবারও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গত বছরে প্রায় ২৯৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হয়েছে এবার ৫৪২০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে । কম খরচে অধিক লাভ, তাই সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ধামইরহাট পৌরসভা এলাকার ফার্শিপাড়া ঈদ্গাহ মাঠ সংলগ্ন জমির ও আগ্রাদ্বিগুণ ইউনিয়নের কুমড়ইল (বেড়াআরা) এলাকার বিভিন্ন মাঠের দিকে তাকালে মনে হয় ফসলের মাঠ যেন সেজেছে গাঁয়ে হলুদের সাজে। মাঠজুড়ে সরিষা ফুল দেখে মনে হবে এ যেন হলুদ রাজার দেশ ৷ মৌমাছির মধু সংগ্রহের গুঞ্জনে মুখরিত অবারিত ফসলের মাঠ। সরিষার ফুলে বাতাসের দোলায় দোল খাচ্ছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। সরিষা চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। সরিষা চাষে সময় লাগে কম, খরচও কম, লাভ বেশি হওয়ায় সরিষা উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এতে করে কৃষকরা লাভবানের পাশাপাশি দেশে তেলের ঘাটতি মিটানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১ টি পৌরসভা ও ৮ টি ইউনিয়নে পতিত জমিতে বাড়তি লাভের আশায় সরিষা চাষ করেন তারা। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়। এতে অল্প সময়ে একই জমিতে দুটি ফসলের চাষে লাভবান হওয়া যায়। জমিতে সরিষা রোপণ করা থেকে পরিপক্ব হতে সময় লাগে প্রায় দেড় থেকে দুই মাস। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা চাষে সব মিলিয়ে খরচ হয় আনুমানিক চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে সরিষা উৎপাদন হয় ৫-৮ মণ। সরিষার দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই সরিষা বিক্রির টাকা দিয়ে ইরি বোরো চাষে খরচ করা যায় পাশাপাশি তাদের ভোজ্য তেলের চাহিদাও মিটানোও সম্ভব।

উপজেলার উমার ইউনিয়ন চকচন্ডি গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি এবারে প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি । প্রতি বিঘা জমিতে দুই হাজার টাকা করে ব্যয় হয়েছে। একই ইউনিয়নের বেলঘরিয়া গ্রামের আতোয়ার রহমান বলেন, প্রায় ৩.৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি ৷ সরিষার ক্ষেতে গেলে প্রাণটা ভরে যায়। পৌরসভার চকযদু গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, আমি আমার সুবিধা ও সাধ্য মোতাবেক এবারে ১ বিঘার মতো জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি । আশা করি গত বছরের ন্যায় এবার এর ভালো ফলন হবে।

তারা বলেন, আশা করছি ভালো ফলন হবে। এছাড়া বর্তমানে সয়াবিন তেলের দাম বেশি। তাই বিকল্প হিসেবে সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারব। তা ছাড়া সয়াবিন তেলের চেয়ে সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।

উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা লাবনী খাতুন বলেন, তেল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষকদের সরিষা চাষ করতে প্রণোদনা দিচ্ছি ও কৃষকদের লাভের জন্য দুই ফসলি থেকে তিন ফসলি জমি তৈরি করতে উৎসাহিত করছি। এই লক্ষ্য নিয়েই ভোজ্য তেল বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি ৷ তিনি জানান, গত বছর আমার ব্লকে সরিষা ৮৫ হেক্টর হলেও এবারে ১৬৫ হেক্টর জমিতে প্রায় দ্বিগুন সরিষা উৎপাদন হয়েছে ৷

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ধামইরহাটে এবারে দ্বিগুণ সরিষার আবাদ, ফুটেছে কৃষকের মুখে হাঁসি

আপডেট সময় : ০৯:২৮:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৪

মোঃ এ কে নোমান, ধামইরহাট (নওগাঁ) প্রতিনিধিঃ নওগাঁর ধামইরহাটে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন দোলা দিচ্ছে সরিষার ফুলের বাতাসে ৷ দেখে মনে হবে হলুদ রঙের শাড়ি পরে যেন কোন বিয়ের হলুদ সন্ধ্যা চলছে । ধামইরহাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে এমনই চিত্র দেখা যাচ্ছে অহরহ ৷

উপজেলার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় সরিষার হলদে ফুলের ফসলে মাঠের পর মাঠ ছেঁয়ে গেছে । মাঠের দিকে তাকালে দিগন্তজুড়ে যেন হলুদ গালিচা বিছানো হয়েছে। চলতি মৌসুমে সরিষা চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা এবারও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। গত বছরে প্রায় ২৯৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হয়েছে এবার ৫৪২০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে । কম খরচে অধিক লাভ, তাই সরিষা চাষের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ধামইরহাট পৌরসভা এলাকার ফার্শিপাড়া ঈদ্গাহ মাঠ সংলগ্ন জমির ও আগ্রাদ্বিগুণ ইউনিয়নের কুমড়ইল (বেড়াআরা) এলাকার বিভিন্ন মাঠের দিকে তাকালে মনে হয় ফসলের মাঠ যেন সেজেছে গাঁয়ে হলুদের সাজে। মাঠজুড়ে সরিষা ফুল দেখে মনে হবে এ যেন হলুদ রাজার দেশ ৷ মৌমাছির মধু সংগ্রহের গুঞ্জনে মুখরিত অবারিত ফসলের মাঠ। সরিষার ফুলে বাতাসের দোলায় দোল খাচ্ছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। সরিষা চাষে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। সরিষা চাষে সময় লাগে কম, খরচও কম, লাভ বেশি হওয়ায় সরিষা উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। এতে করে কৃষকরা লাভবানের পাশাপাশি দেশে তেলের ঘাটতি মিটানো সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১ টি পৌরসভা ও ৮ টি ইউনিয়নে পতিত জমিতে বাড়তি লাভের আশায় সরিষা চাষ করেন তারা। সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়। এতে অল্প সময়ে একই জমিতে দুটি ফসলের চাষে লাভবান হওয়া যায়। জমিতে সরিষা রোপণ করা থেকে পরিপক্ব হতে সময় লাগে প্রায় দেড় থেকে দুই মাস। প্রতি বিঘা জমিতে সরিষা চাষে সব মিলিয়ে খরচ হয় আনুমানিক চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে সরিষা উৎপাদন হয় ৫-৮ মণ। সরিষার দামও ভালো পাওয়া যায়। তাই সরিষা বিক্রির টাকা দিয়ে ইরি বোরো চাষে খরচ করা যায় পাশাপাশি তাদের ভোজ্য তেলের চাহিদাও মিটানোও সম্ভব।

উপজেলার উমার ইউনিয়ন চকচন্ডি গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি এবারে প্রায় আড়াই বিঘা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি । প্রতি বিঘা জমিতে দুই হাজার টাকা করে ব্যয় হয়েছে। একই ইউনিয়নের বেলঘরিয়া গ্রামের আতোয়ার রহমান বলেন, প্রায় ৩.৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি ৷ সরিষার ক্ষেতে গেলে প্রাণটা ভরে যায়। পৌরসভার চকযদু গ্রামের কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, আমি আমার সুবিধা ও সাধ্য মোতাবেক এবারে ১ বিঘার মতো জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি । আশা করি গত বছরের ন্যায় এবার এর ভালো ফলন হবে।

তারা বলেন, আশা করছি ভালো ফলন হবে। এছাড়া বর্তমানে সয়াবিন তেলের দাম বেশি। তাই বিকল্প হিসেবে সরিষার তেল ব্যবহার করতে পারব। তা ছাড়া সয়াবিন তেলের চেয়ে সরিষার তেলের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি।

উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা লাবনী খাতুন বলেন, তেল ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষকদের সরিষা চাষ করতে প্রণোদনা দিচ্ছি ও কৃষকদের লাভের জন্য দুই ফসলি থেকে তিন ফসলি জমি তৈরি করতে উৎসাহিত করছি। এই লক্ষ্য নিয়েই ভোজ্য তেল বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি ৷ তিনি জানান, গত বছর আমার ব্লকে সরিষা ৮৫ হেক্টর হলেও এবারে ১৬৫ হেক্টর জমিতে প্রায় দ্বিগুন সরিষা উৎপাদন হয়েছে ৷