দখলবাজদের কবলে শেরপুর রানিরহাটের খাল ও কোটি টাকার বাণিজ্যর আশঙ্কা।
- আপডেট সময় : ০৮:২৭:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মার্চ ২০২৩ ৪৮৯ বার পড়া হয়েছে
বগুড়া শেরপুর উপজেলার রানি হাটের খাস খতিয়ান এর সরকারি খালের কোটি টাকা মুল্যের জায়গা যুগ যুগ ধরে অবৈধ দখল করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। এতে করে প্রভাবশালী দালালদের ভাগ্যের উন্নয়ন হলেও হাটের উন্নয়ন হয়নি দীর্ঘ শত বছরেও। এই অবৈধ দখলবাজ এবং সেন্টিকেটদের গড়ে ওঠা ভবনের কারণে খালের পানি প্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায়, লক্ষ লক্ষ কৃষকের জমির ফসল নষ্ট হতে বসেছে। এদিকে দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় প্রতিবছর সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব। হাটটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই খালের সুবিস্তৃত সরকারি জায়গা অবৈধ দখলদারদের কবলে পড়ে আছে দীর্ঘকাল ধরে । বর্তমানে ঐতিহ্যবাহী রানীর হাটটির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেলেও সংকটে পড়েছে খালের সরকারি জায়গা। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করলেও প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না তারা। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, প্রভাবশালীদের ক্ষমতার দাপট এতই যে, প্রশাসনকেও টাকার বিনিময় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, হাটের পাশ দিয়ে বয়ে চলা একটি সরকারি খালের দুই পাশের জায়গা দখল করে অন্তত ২০০/৩০০ টি কাঁচাপাকা অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এসব স্থাপনায় কেউ কেউ নিজেরা ব্যবসা পরিচালনা করছেন। আবার অনেকে ৩-৪ লক্ষ টাকা জমানতের মাধ্যমে দোকান ভাড়া দিয়ে প্রতিমাসে ৫-৬ হাজার টাকা ভাড়া বাবদ আদায় করছে। অনেকে আবার স্থাপনা নির্মাণ করে পজিশন বিক্রিও করে দিচ্ছে। আবার অনেকেই দোকান পজিশন নেওয়ার জন্য সিন্ডিকেট দালালদের হাতে তুলে দিচ্ছেন ৫-৬ লক্ষ টাকা। যা দেখার কেউ নেই।
স্থানীয় কিছু সাংবাদিকদের তৎপরতায় গত মাসে উচ্ছেদ অভিযানের জন্য সতর্ক নোটিশ জারি করলে, দখলবাজ সিন্ডিকেট দালালদের তোরজোর শুরু হয়ে যায়। এসব স্থানীয় প্রভাবশালী দখলবাজ সিন্ডিকেটেরা উচ্ছেদ অভিযান ঠেকাতে সাংবাদিকসহ বিভিন্ন মহল লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে, হাত করার চেষ্টা করে। এসব মহলে কোন প্রকার পাত্তা না পাওয়ায়, অর্থের বিনিময়ে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে প্রশাসনকে। লক্ষ লক্ষ টাকার গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে শেরপুর উপজেলা প্রশাসন এবং বগুড়া জেলা পরিষদের চারপাশে, যার কারণে উচ্ছেদ অভিযানের নোটিশ দেওয়ার সময়সীমা পার হওয়ার পরও পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে সময় ক্ষেপণ করছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
আর এই রানীর হাটের খালের দুই পাশের জায়গা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে লাভবান হচ্ছেন প্রভাবশালী কিছু দালাল এবং সরকারি ভূমি রক্ষা কর্মকর্তারা। এদের লাভবান হলেও ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারণ কৃষকদের। কারণ, এই খালটি উপজেলার বিশালপুর, ভবানীপুর, কুসুম্বি এবং সীমাবাড়ি ইউনিয়নের কৃষকদের লক্ষ লক্ষ হেক্টর ফসলি জমির পানি নিষ্কাশনের একটি মাত্রই পথ। আর এসব খালের দুপাশে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কারণে গত বছর বর্ষা মৌসুমে শত শত হেক্টর জমির কাঁচা পাকা ধান বর্ষার পানিতে তলিয়ে গিয়েছে। তাই এলাকার সাধারণ সহজ সরল মানুষের দাবি লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে কৃষকের চোখের জল যেন মূল্যহীন হয়ে না পড়ে প্রশাসনের কাছে।