ঢাকা ০৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
আগামীর বাংলাদেশ তোমাদের হাতে তুলে দিতে চাই : বাংলাদেশ জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্ম জয়ন্তী: মধুমেলা উপলক্ষে সাতক্ষীরায় বন্ধুসভার পাঠচক্র‍ বিজিবির অভিযানে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের মিয়ানমারের ৩১ টি গরু জব্দ! গুম খুনের প্রতিটি মামলায় হুকুমের আসামী থাকবে হাসিনা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি জলঢাকায় জমি দখল ও থানায় মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন গাজীপুরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেদখলের অভিযোগে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন বিক্ষোভ ভেপুরাইজার মেশিন ক্রয়ে দুর্নীতির অভিযোগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযান সৈয়দপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে এ বছর ৫৩ জন শিক্ষার্থী সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন বগুড়ায় ফ্রেন্ডস্ ব্লাড ডোনেট ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অসহায় বৃদ্ধা মাকে হুইল চেয়ার প্রদান জবাবদিহি পত্রিকার ৮ম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে খোকসায় আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

টাকা নয়, হুমকিতে আত্মগোপনে ছাত্রলীগ নেতা শান্ত

আবু হাসান আপন, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া) প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় : ০৮:৪২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ১২৪ বার পড়া হয়েছে
দৈনিক যখন সময় অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আবু হাসান আপন, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া) প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শান্ত কুমার রায় নামের এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। জেলার নবীনগর থানায় তার বিরুদ্ধে অন্তত ১২ জন অভিযোগ করেছেন।

এ অবস্থায় শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে আত্মগোপনে থাকা ছাত্রলীগ নেতা শান্ত কুমার রায় তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেই স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন, একজন তার কাছে দুই কোটি টাকা দাবি করলে তিনি ৪০ লাখ দিয়েছিলেন। তারপরও তিনি হুমকিতে থাকায় পালিয়ে গেছেন বলে জানান।

তার এই স্ট্যাটাসে ভুক্তভোগী পাওনাদাররা ক্ষুব্ধ। কারণ যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তারা শান্তর ভয়েজ রেকর্ড ও একাউন্টের চেক বইয়ের প্রমাণ রেখেছেন বলে জানিয়েছেন।

শান্ত কুমার রায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের নির্মল রায়ের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও রয়েছেন। ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি ইসকনের (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস) সক্রিয় অনুসারী ছিলেন। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। পাওনা টাকার বিষয়ে অভিযোগ তুলে শুক্রবার পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ১২ জন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে ছাত্রলীগ নেতা শান্ত লিখেছেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আজ আমি সবার কাছে খারাপ কিন্তু বিবেচনা করুন আমি কেন এমন হলাম! যে আমি বিনামূল্যে একটি চকলেটও কারও কাছ থেকে খাইনি কেন এত বড় অপরাধী হলাম। যাকে কোটি কোটি টাকা দিলাম, জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় নষ্ট করলাম তার জন্য আজ আমার এ অবস্থা। যার কথা বলছি, সে কিছুদিন আগে আমার কাছ থেকে দুই কোটি টাকা চাইলো। আমি ৪০ লাখ টাকা দিলাম। পরে বললাম, ভাই, আমি আর পারছি না। সে বললো তোমার বাবার কাছে বলো। আমি বললাম, আমার বাবার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো না। তাছাড়া আমার বাবার ব্যবসা এখন নষ্ট হয়ে গেছে। আমার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তারপর সে বলে, আমি কিছু বুঝি না, টাকা আমার লাগবে। পরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ। আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে সে ও তার সহযোগীরা।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘মেরে ফেলবে টাকা না দিলে তার সহযোগীরা খবর পাঠায়। এ ভয়ে আমি আমার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাই। আমার কাছে অডিও, ভিডিও-রেকর্ড সব কিছু আছে। কিন্তু আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন বাঁচানোর জন্য তার নাম, প্রমাণগুলো প্রকাশ করতে পারছি না। বাড়ি থেকে যখন বের হই তখন আমার কাছে সাত হাজার টাকা ছিল। এখন আমার বিরুদ্ধে কোটি টাকার অভিযোগ!’

ছাত্রলীগ নেতা শান্তর ভাষ্য, ‘যেতেতু আমি ব্যবসা করেছি তাই আমার দেনা-পাওনা আছে। কিন্তু আজ সে তিলকে তাল করে আমার ও আমার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও খবর প্রকাশ করছে। যারা আমার কাছ থেকে সত্যিকারের টাকা পাওনাদার তারা একদিন তা ফেরত পাবেন। আর যারা মিথ্যা-বানোয়াট অভিযোগ করেছেন তাদের বিচার আইন দেখবে।’

তবে ছাত্রলীগ নেতা শান্ত তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার কাছে দুই কোটি টাকা কে দাবি করেছিলেন, কেন করেছিলেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেননি। কোথায় অবস্থান করছেন, তাও জানাননি তিনি।

এ বিষয়ে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, শান্ত রায়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তার বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

টাকা নয়, হুমকিতে আত্মগোপনে ছাত্রলীগ নেতা শান্ত

আপডেট সময় : ০৮:৪২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

আবু হাসান আপন, নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়ীয়া) প্রতিনিধি:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শান্ত কুমার রায় নামের এক ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। জেলার নবীনগর থানায় তার বিরুদ্ধে অন্তত ১২ জন অভিযোগ করেছেন।

এ অবস্থায় শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে আত্মগোপনে থাকা ছাত্রলীগ নেতা শান্ত কুমার রায় তার ফেসবুক আইডি থেকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেই স্ট্যাটাসে তিনি দাবি করেন, একজন তার কাছে দুই কোটি টাকা দাবি করলে তিনি ৪০ লাখ দিয়েছিলেন। তারপরও তিনি হুমকিতে থাকায় পালিয়ে গেছেন বলে জানান।

তার এই স্ট্যাটাসে ভুক্তভোগী পাওনাদাররা ক্ষুব্ধ। কারণ যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তারা শান্তর ভয়েজ রেকর্ড ও একাউন্টের চেক বইয়ের প্রমাণ রেখেছেন বলে জানিয়েছেন।

শান্ত কুমার রায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের নির্মল রায়ের ছেলে। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদেও রয়েছেন। ছাত্রলীগের রাজনীতির পাশাপাশি ইসকনের (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস) সক্রিয় অনুসারী ছিলেন। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। পাওনা টাকার বিষয়ে অভিযোগ তুলে শুক্রবার পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ১২ জন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে ছাত্রলীগ নেতা শান্ত লিখেছেন, ‘প্রিয় দেশবাসী, আজ আমি সবার কাছে খারাপ কিন্তু বিবেচনা করুন আমি কেন এমন হলাম! যে আমি বিনামূল্যে একটি চকলেটও কারও কাছ থেকে খাইনি কেন এত বড় অপরাধী হলাম। যাকে কোটি কোটি টাকা দিলাম, জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় নষ্ট করলাম তার জন্য আজ আমার এ অবস্থা। যার কথা বলছি, সে কিছুদিন আগে আমার কাছ থেকে দুই কোটি টাকা চাইলো। আমি ৪০ লাখ টাকা দিলাম। পরে বললাম, ভাই, আমি আর পারছি না। সে বললো তোমার বাবার কাছে বলো। আমি বললাম, আমার বাবার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো না। তাছাড়া আমার বাবার ব্যবসা এখন নষ্ট হয়ে গেছে। আমার সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তারপর সে বলে, আমি কিছু বুঝি না, টাকা আমার লাগবে। পরে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ। আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতে থাকে সে ও তার সহযোগীরা।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘মেরে ফেলবে টাকা না দিলে তার সহযোগীরা খবর পাঠায়। এ ভয়ে আমি আমার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাই। আমার কাছে অডিও, ভিডিও-রেকর্ড সব কিছু আছে। কিন্তু আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন বাঁচানোর জন্য তার নাম, প্রমাণগুলো প্রকাশ করতে পারছি না। বাড়ি থেকে যখন বের হই তখন আমার কাছে সাত হাজার টাকা ছিল। এখন আমার বিরুদ্ধে কোটি টাকার অভিযোগ!’

ছাত্রলীগ নেতা শান্তর ভাষ্য, ‘যেতেতু আমি ব্যবসা করেছি তাই আমার দেনা-পাওনা আছে। কিন্তু আজ সে তিলকে তাল করে আমার ও আমার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও খবর প্রকাশ করছে। যারা আমার কাছ থেকে সত্যিকারের টাকা পাওনাদার তারা একদিন তা ফেরত পাবেন। আর যারা মিথ্যা-বানোয়াট অভিযোগ করেছেন তাদের বিচার আইন দেখবে।’

তবে ছাত্রলীগ নেতা শান্ত তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তার কাছে দুই কোটি টাকা কে দাবি করেছিলেন, কেন করেছিলেন সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেননি। কোথায় অবস্থান করছেন, তাও জানাননি তিনি।

এ বিষয়ে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, শান্ত রায়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তার বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে।