ক্যান্টমেন্ট’র মালি আরিফের ভয়ে ঘুম হারাম স্থানীয় অটো চালক পরিবার
- আপডেট সময় : ০৯:৩৫:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ১৩৭ বার পড়া হয়েছে
রংপুরে দাপুটে মালী আরিফের ভয়ে ঘুম হারাম ফরিদার-বৃদ্ধা মায়ের আর্তনাদ কানে যায়নি কারো। রংপুর মহানগরীর ১৩নং ওয়ার্ড়ের পশ্চিম পীরজাবাদ ব্যাপারী পাড়াস্থ অসহায় অটো চালক আব্দুর রহমান’র পরিবারের আহাযারী শোনার কেউ নেই! রংপুর ক্যান্টমেন্ট এ কর্মরত মালী প্রভাবশালী আরিফুল ইসলামের দাপটে তটস্থ স্থানীয়রা। একের পর এক অপকর্ম করলেও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি তাকে। দাপুটে মালির অনাচার অবিচারে অতিষ্ঠ হয়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ২২ইং রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় এজাহার দেন ভুক্তভোগী নির্যাতনের শিকার ফরিদা বেগম। তদন্ত করে মামলা রেকর্ড করবে মর্মে দিনের পর দিন কালক্ষেপণ করেন রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ঘটনার সত্যতা পাবার পরে বিভিন্ন অজুহাতে মামলা রেকর্ড করেনি। অপরদিকে সেই সুযোগ-কে কাজে লাগিয়ে আরিফুলের কু-প্ররোচনায় ভুক্তভোগী ফরিদা বেগম, আব্দুর রহমান, সাইফুল ইসলাম কে আসামি করে পুর্বে দায়েরকৃত ধর্ষণ চেষ্টা মামলার ৩নং আসামী রঞ্জন আলীর পিতা মমদেল হোসেন (৬০) বাদী হয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন বলে অভিযোগ করেন অসহায় হতদরিদ্র ফরিদা বেগম।
গত ১০ অক্টোবর ২২ইং রংপুর জেলা নারী শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ এর মামলা নং ১৩৯/২২ এর নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের ১০ ধারা দণ্ডবিধি ৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৪২৭/৫০৬, আসামী ১-আরিফুল ইসলাম (৩৫) পিতা আকবর আলী,২- মেহেদী হাসান (২২) পিতা মৃত নজরুল ইসলাম, ৩-রঞ্জন আলী (৩০) পিতা মমদেল হোসেন, ৪-রুজিনা বেগম (৩০) স্বামী আরিফুল ইসলাম, সর্ব সাং পশ্চিম পীরজাবাদ কোতোয়ালি রংপুর।
এজাহার সুত্রে জানা যায়, ১নং আসামি আরিফ বাদীনি ফরিদার প্রতি কুদৃষ্টি দিয়া খারাপ অঙ্গভঙ্গি করে আসছিল, বাদীনি তাকে বারংবার এমন আচরণ না করার জন্য অনুরোধ করে আসছিলেন। তাতেও কাজ না হলে তার বাবা এবং স্ত্রীকে এমন আচরণ না করার জন্য অনুরোধ জানান। পরে ২৫-১০/২২ ইং বাড়ি ফাঁকা পাইয়া আসামি আরিফ বাদীনির বাড়িতে অনাধিকার প্রবেশ করেন এবং কু-প্রস্তাব দেয়। তার প্রস্তাবে রাজি নাহয়ে তিনি আত্নচিৎকার করিলে বাদীনির মা সহ স্থানীয়রা আগাইয়া আসিলে আসামি আরিফুল ইসলাম পালিয়ে যায়। পরে বাদীনির মা ১নং আসামির বাড়িতে গিয়ে ঘটনা জানাইলে ২-৪ নং আসামি তার বিচার না করে আরো কিছু লোকজন নিয়ে বাদীনির বাড়িতে অনাধিকার প্রবেশ করে এলোপাথাড়ি মারপিট করেন। বাদীনির মা ফাতেমা প্রতিবাদ করিলে আসামি রঞ্জন বৃদ্ধাকেও মারপিট করেন। এবং বাড়িঘরে ভাংচুর চালান এতে ৫০০০ টাকার ক্ষতি সাধন হয়। অবশেষে আদালতে মামলা করলে তদন্ত ভার পায় পিবিআই সেই মামলা তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় মামলার অপর আসামি রঞ্জনের বাবা মমদেল হোসেন বাড়ি চুরির মিথ্যা অভিযোগ এনে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং সিআর ৬৪/২৩ তারিখ ১০-০৪-২৩ ইং সেই মামলা তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার সাব ইন্সপেক্টর রেজাউল সাংবাদিকদের বলেন, মমদেল হোসেন এর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার প্রতিবেদন বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করা হবে।
উল্লেখ্য, প্রায় ১০ বছর আগে রংপুর ক্যান্টমেন্ট এ কর্মরত মালি আরিফের উপদ্রব শামলাতে না পেরে, ফরিদা বেগম বাধ্য হয়ে তার শিশু কন্যা নিশবেদগঞ্জ জরিমুন নেছা স্কুলের ৮ম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বিবাহ দিতে হয়েছে।ফরিদা বেগম বলেন, আমরা গরীব মানুষ আমার স্বামী ঢাকায় অটো রিকশা চালান, খুব ইচ্ছে ছিল কষ্ট করে মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবো। কিন্তু এলাকার চিহ্নিত অপরাধী আরিফুর ইসলাম এর জন্য সেটাও পারিনি। এরা মানুষের ভালো দেখতে পারেনা। আমি দেশের সরকার, প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের কাছে এর বিচার চাই। আমরা গরীর কিন্তু শান্তিতে বসবাস করতে চাই।