আজ ৫ই মে নাটোরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে গণহত্যা দিবস
- আপডেট সময় : ০১:১৫:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৫ মে ২০২৩ ২০৬ বার পড়া হয়েছে
আজ ৫ই মে নাটোরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের গণহত্যা দিবস। মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেওয়া ও সহযোগিতাদানের জন্য ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মিলের তৎকালীন প্রশাসনিক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট আনোয়ারুল আজিমসহ ৪২ জনকে হত্যা করে। নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলস চত্বরের অফিসার্স কলোনির পুকুরপাড়ে সকলকে দাঁড় করিয়ে মেশিন গানের ব্রাশ ফায়ার ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে নৃশংস ভাবে হত্যা করে ।
এই গণহত্যার যারা শিকার হয়েছেন তাদের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছেন মিলের কর্মকর্তা ও শ্রমিক-কর্মচারীরা।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্যাতনের প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায় যে, ১৯৭১ সালের ৫ মে সকালে হানাদার বাহিনী নাটোরের লালপুর উপজেলার গোপালপুর নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে প্রবেশ করে।
এসময় মিলে কর্মরত অবস্থায় মিলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট আনোয়ারুল আজিমসহ প্রায় ৪৫/৪৬ জন শ্রমিক কর্মচারীকে ধরে মিল চত্বরের পুকুরপাড়ে নিয়ে যায় হানাদাররা।
প্রথমে গুলি ও পরে বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে পুকুরপাড়ে ফেলে রেখে যায়। হানাদারদের বর্বরতায় শহীদ হন ৪২ জন। এই নৃশংস ও নারকীয় হত্যাকান্ড থেকে বেঁচে যান ৩/৪জন। শহীদদের রক্তে পুকুরের পানি লাল হয়ে যায়।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতারা জানান, স্বাধীনতার পর পুকুরের নামকরন করা হয় ‘শহীদ সাগর’। গোপালপুর রেল ষ্টেশনের নাম পরিবর্তন করে নামকরণ করা হয় আজিম নগর রেল স্টেশন ।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের পুকুর পাড়েই (বর্তমানে শহীদ সাগর) গড়ে তোলা হয়েছে শহীদদের স্মরনে স্মৃতিস্তম্ভ এবং একটি স্মৃতি যাদুঘর।
মিল কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর ৫ মে দিনটিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরন ও শহীদ পরিবারকে মিলের পক্ষ থেকে সহায়তা দান করলেও স্বাধীনতার ৪০ বছরেও এই গণহত্যার রাষ্ট্রীয় কোন স্বীকৃতি মেলেনি।
এমনকি এসব শহীদ পরিবারের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কোন পৃষ্ঠপোষকতা। শহীদ পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
নর্থবেঙ্গল সুগার মিলের এমডি আনিসুল আজিম জানান প্রতিবছর মিলের পক্ষ থেকে পাক হানাদারদের হাতে নৃশংসতায় নিহত শহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। শহীদ সাগর প্রাঙ্গণে মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
তবে রাষ্ট্রীয়ভাবে যদি শহীদদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়, তাহলে শহীদ পরিবার, মিলের শ্রমিক কর্মচারী ও এলাকার মানুষ আরো বেশী আত্মতৃপ্তি পাবেন।